ভূমিকা: পশ্চিমবঙ্গ-সহ চারটি রাজ্যের বহু মানুষের চোখ এখন সুপ্রিম কোর্টের দিকে। এসআইআর (স্পেশাল ইন্টেন্সিভ রিভিশন) প্রক্রিয়ায় এনুমারেশন ফর্ম জমা ও ডিজিটাইজেশনের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন নিয়ে শীর্ষ আদালতে যে শুনানি চলছে, তা নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। ৪ ডিসেম্বরের সময়সীমা কি আদৌ বাড়ানো হবে? নাকি চাপ বাড়বে বিএলও-দের ওপর? সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশে উঠে এসেছে নতুন মোড়।
আদালতের সর্বশেষ নির্দেশ: বুধবার প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। আদালত আপাতত সকল পক্ষকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গকে আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে। তামিলনাড়ু, বিহার ও কেরলের মামলাও এই বেঞ্চে শোনা হচ্ছে। তবে কেরল সরকারকে আলাদা করে স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কমিশন বনাম রাজ্যের যুক্তি-তর্ক: শুনানি চলাকালীন নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী দাবি করেন, ইতিমধ্যেই ৫০ শতাংশ ডিজিটাইজেশন সম্পন্ন হয়েছে এবং কোথাও বড় কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তিনি আরও জানান, যাঁরা এনুমারেশন ফর্ম পাননি, তাঁদের জন্য সাপ্লিমেন্টারি তালিকার কথা ভাবা হচ্ছে। কমিশনের অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতারা বিএলও-দের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ ও কেরলের হয়ে সওয়াল করেন বিশিষ্ট আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি কমিশনের দাবি নস্যাৎ করে বলেন, ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করা অবাস্তব। তামিলনাড়ুতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রসঙ্গ এবং বিএলও-দের ওপর অত্যধিক কাজের চাপের কথা উল্লেখ করে তিনি সময়সীমা বাড়ানোর পক্ষে জোর সওয়াল করেন। সিব্বল বলেন, কাজের চাপে পশ্চিমবঙ্গে একাধিক বিএলও-র মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
বিএলও-দের কাজের চাপ ও বাস্তবতা: আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতের কাছে আবেদন জানান, যাতে ৪ ডিসেম্বরের পরেও বিএলও-রা প্রতিদিন ৫০টি করে ফর্ম আপলোড করতে পারেন। গ্রাউন্ড রিয়েলিটি বা বাস্তব চিত্র যে কমিশনের দাবির চেয়ে অনেক আলাদা, তা তিনি বারবার তুলে ধরেন। বিএলও-দের ওপর মানসিক ও শারীরিক চাপ যে চরমে পৌঁছেছে, তা এখন আর অজানা নয়।
উপসংহার: আপাতত ৪ ডিসেম্বর সময়সীমা হিসেবে বহাল থাকলেও, সুপ্রিম কোর্ট সব পক্ষের হলফনামা জমা নেওয়ার পর কী রায় দেয়, সেটাই দেখার। ৯ ডিসেম্বরের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে হাজার হাজার কর্মী ও সাধারণ মানুষের স্বস্তি। সময়সীমা বাড়বে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
কি-পয়েন্টস (Key Takeaways):
- সুপ্রিম নির্দেশ: সব পক্ষকে হলফনামা জমার নির্দেশ; বাংলার জন্য ডেডলাইন ৯ ডিসেম্বর।
- কমিশনের দাবি: ৫০% কাজ সম্পন্ন, সময় বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
- রাজ্যের যুক্তি: কাজের চাপে বিএলও-দের মৃত্যু ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সময়সীমা বাড়ানো জরুরি।
- অনিশ্চয়তা: ৪ ডিসেম্বর সময়সীমা থাকলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে আদালতের রায়ের ওপর।
ট্যাগ: #SupremeCourt #SIR #WestBengal #ElectionCommission #Digitization #BLO #NewsUpdate #KolkataNews





